প্রকাশিত: ১২/০৩/২০১৮ ৮:৪৫ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:৩৪ এএম
ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট::

রোহিঙ্গা সংকটকে পুঁজি করে কোনো বিদেশি বিশেষ করে ভিন দেশি দুষ্টচক্র যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে বিষয়ে আগাগোড়া সতর্ক সরকার। এজন্য ‘ভ্রমণ ভিসা’য় রোহিঙ্গা এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা-সংশ্লিষ্ট কাজে বাংলাদেশে আসতে আগ্রহীদের পরিচয় এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে আগেভাগে নিশ্চিত হয়ে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা প্রদানে বিদেশস্থ বাংলাদেশের সব মিশনকে জরুরি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মনবিক সহায়তার কাজে বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী বিদেশিদের ভিসা ইস্যু, মেয়াদ বাড়ানো এবং নবায়নের ক্ষেত্রে এনজিও ব্যুরোর পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গাফলতির বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের আগাম সতর্ক করে নোটিশ জারি করা হয়েছে।

এ নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গতকাল বলেন, এটি অনেকটা রুটিন কাজ। এ নিয়ে সরকার বরাবরই সতর্ক। কিন্তু মানবিকতার প্রশ্নে অনেকে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন। রোহিঙ্গা ঢলের সময় সেটি আটকানো যায়নি। কিন্তু এখন আর ভ্রমণ ভিসায় কেউ আসতে পারবে না। এলেও স্পর্শকাতর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় যেতে পারবে না। এটি নিশ্চিত করতে দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোতে নানা ধরনের উদ্যোগ চলমান রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে সরকার একটু স্ট্রিক্ট হয়েছে। মিশনগুলোর প্রতি আগেও নির্দেশনা ছিল। নতুন করে তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে।

বলা হয়েছে- রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ বা সহায়তা করতে আগ্রহী বিদেশি বন্ধু-উন্নয়ন সহযোগীদের কোনো অবস্থাতেই ভ্রমণ ভিসা নয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তাদের উদ্দেশ্য এবং পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা ইস্যুর নির্দেশনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট। আমরা এর টেকসই সমাধান চাই। বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের বাসিন্দাদের রাখাইনে নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়া এবং সেখানে তাদের শান্তিপূর্ণ পুনর্বাসনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চাওয়া। ঢাকার এ অবস্থানে গোটা বিশ্বের সমর্থন রয়েছে। এখানে অস্থায়ী আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্ব সমপ্রদায়কে সঙ্গে নিয়েই তাদের প্রতি মানবিক সহায়তা দিয়ে যাবো। মানবিক এ সংকটে সহায়তার জন্য অনেকে এসেছেন, অনেকে আসছেন। সত্যিকার অর্থে যারা এ সংকটে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চান সরকার তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।

এমনকি যারা স্বল্প সময়ের জন্য ভ্রমণ ভিসায় এসেছেন কিন্তু তাদের যৌক্তিক কারণেই এখানে থাকতে হচ্ছে তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সরকার নিশ্চিত করছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা কোনো আবদ্ধ (কনফাইন্ড এরিয়া) এলাকা নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিস্তৃত ওই এলাকায় অনেকে কাজ করেন। কে কোন উদ্দেশ্যে কাজ করেন সেটি নজরদারি বা গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমেই নিশ্চিত হতে হয়। যাদের কার্যক্রম ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ তাদের আইনের আওতায় আনা হয়। এটি চলমান প্রক্রিয়া। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

পাঠকের মতামত